স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসাসহ সবধরণের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে আজ ২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার জেলায় জেলায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। প্রশাসনের বাধায় কোনো কোনো জেলায় মানববন্ধন করলেও বেশিক্ষণ দাঁড়াতে দেয়নি পুলিশ। কোথাও কোথাও বাঁধার সম্মুখীন হয়েছেন দলের জেলা নেতৃবৃন্দ।
ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার ব্যানার কেড়ে নেয় পুলিশ। পুলিশের সাথে ধস্তাদস্তির হয় জেলা নেতৃবৃন্দের। নারায়ণগঞ্জ মহানগরের মানববন্ধন পুলিশের বাধায় পড়ে। মুন্সিগঞ্জ ও কুমিল্লা পশ্চিম জেলা শাখার মানববন্ধনেও পুলিশ বাধা দেয়।
কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে অল্প সময়ের জন্য কুমিল্লা জেলা পশ্চিম মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম। জেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারী মাওলানা আবুল হাসান রায়হানের পরিচালনায় মানববন্ধনে জেলা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা জেলা দক্ষিণের মানববন্ধন কদমতলীর চৌরাস্তায় হওয়ার কথা থাকলেও পুলিশ নেতাকর্মীদের দাঁড়াতে দেয়নি। পরে পুলিশের সাথে বাকবিতন্ডার মধ্যে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘটে।
মানববন্ধনগুলোতে নেতৃবৃন্দ বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। শিক্ষার সঙ্গে জড়িত সবকিছুতেই বিপর্যয় নেমে এসেছে। লাগাতার ১৮ মাস ধরে স্কুল, কলেজ, মাদরাসা এবং বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। মাঝখানে কিছুদিন কওমি মাদরাসা চালু থাকলেও আবারো তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। স্কুল, কলেজ ও আলিয়া মাদরাসার সকল ধরণের পরীক্ষা বন্ধ। গত বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অটো পাস দেয়া হয়েছে। এ বছরের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা এখনো হয়নি। পরীক্ষা হবে কি না, তাও স্পষ্ট নয়। শিক্ষার্থীরা পড়ার টেবিল ছেড়ে এবারও অটো পাসের অপেক্ষায়। নেতৃবৃন্দ বলেন, শিক্ষামন্ত্রী বলছেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার জন্য অভিভাবকদের কোন চাপ নেই’ তার এ বক্তব্যে প্রমাণ করে দেশের সাধারণ মানুষের সাথে মন্ত্রীদের কোন সম্পর্ক নেই। তারা অবিলম্বে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার জোর দাবি জানান।
যেসকল জেলায় আজ বিক্ষোভ কর্মসূচি একযোগে পালিত হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা, নরসিংদী, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, শেরপুর, মোমেনশাহী, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, খুলনা, নড়াইল, সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, চট্টগ্রাম মহানগর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, কুমিল্লা জেলা দক্ষিণ, কুমিল্লা উত্তর, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বরিশাল, পটুয়াখালী, ঝালকাঠী, পিরোজপুর, ভোলা, সিলেট, সুনামগঞ্জ মৌলভী, রাজশাহী, কুড়িগ্রাম, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, মেহেরপুর, পাবনা জেলায় পৃথক পৃথকভাবে মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধনগুলোতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণও ছিলো চোখে পড়ার মতো।
পীরসাহেব চরমোনাই’র অভিনন্দন
শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ শিক্ষাজীবন রক্ষার্থে অবিলম্বে সবধরণের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবীতে যে সকল জেলা শাখা প্রশাসনের বাধা উপেক্ষা করে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি সফল করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই জেলা নেতৃবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক মোবারকবাদ ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।