সাকির আহমদ ॥
মালিবাগে চার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদে জুমার কুতবায় জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবী জানানো হয়েছে । ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন ঘটনার জন্য সম্পূর্ণভাবে টিএন্ডটির পরিচালক (উত্তর) মোহাম্মদ তৌফিক ও রমনা ছাত্রদলের সভাপতি হানিফকে দায়ী করেছে । মালিবাগ টিএন্ডটি কলোনী সংলগ্ন বায়তুল আজিম জামে মসজিদকে কেন্দ্র করে
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনসার ও দুর্বৃত্তদের গুলীতে মাদরাসার তিন ছাত্র ও একজন পথচারী নিহত হয়। এই ঘটনায় ১৯ জন আনসারকে ক্লোজ করা হয়েছে। বায়তুল মোকাররমে জুমার পর রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
ইত্তেফাক রিপোর্ট ॥
বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠন মালিবাগে বায়তুল আজিম মসজিদের মুসল্লীদের ওপর হামলা চালিয়ে ৪ জন মুসল্লী ও মাদরাসা ছাত্রকে হত্যা করার ঘটনার নিন্দা ও জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি দাবী করেছে।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে মালিবাগে মসজিদের জায়গা নিয়ে সংঘটিত ঘটনায় ৪ জনকে হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন. এই অনাকাঙ্খিত (২য় পৃষ্ঠায় ৭-এর কঃদ্রঃ)
এদিকে বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেট, পুরানা পল্টন মোড় থেকে সাবেক দৈনিক বাংলা মোড়, মুক্তাঙ্গন এলাকায় মালিবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। গোটা এলাকা আলেম-ওলামাদের প্রতিবাদী শ্লোগানে মুখরিত ছিল। ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন
মহানগর কমিটি, ইসলামী ছাত্র মজলিস, আল্লাহর দল. খেলাফত আন্দোলন ও বায়তুল মোকাররম মসজিদ দক্ষিণ বারান্দা মুসল্লী লেখা ব্যানারে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়।
হাউজ বিল্ডিংয়ের সামনে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ওলামাদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে অতীতে কেউ রক্ষা পায়নি। বর্তমান চারদলীয় জোট সরকারও রক্ষা পাবে না। তাদের পতন হবে এসব ঘটনার কারণেই । সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মাওলানা হেমায়েত উদ্দিন।
বক্তার বলেন, আল্লাহর ঘর মসজিদকে রক্ষা করতে গেলে চারজনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা
করা হয়েছে । এই ঘটনা কোন ধরনের ইসলামী মূল্যবোধ? নির্বাচনের সময় চারদলীয় জোট বলেছিল, তারা ক্ষমতায় গেলে আলেম ও ওলামাদের নিরাপত্তাসহ মসজিদ-মাদ্রাসার উন্নয়ন করবে। মসজিদ ভেঙ্গে মুসল্লীদের হত্যা করা উন্নয়ন কিনা তা সরকারকে বলতে হবে। সমাবেশে জোট সরকারের মন্ত্রী
মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মোজাহিদ, শায়খুল হাদিস মাওলানা আল্লামা আজিজুল হক ও মুফতি ফজলুল হক আমিনী এমপির তীব্র সমালোচনা করা হয়।
সমাবেশে বলা হয়, গতকাল জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা ওবায়দুল হককে জুমার খুতবা পড়া থেকে বিরত রাখাটা ষডযন্ত্রেরে ইঙ্গিত দিচ্ছে। শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মহানগর কমিটির নেতা মাওলানা নূরুল হুদা, আবু সাঈদ সিদ্দিকী, অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন পুলিশের বাড়াবাড়ির কারণে নিহতদের লাশ দেখতে পারেননি ।
বিকেল সাড়ে তিনটায় জাতীয পার্টির এ) চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তিনি মসজিদের মুসল্লীদের সাথে কথাবার্তা বলে উপস্থিত লোকজনদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। এরশাদ- বলেন, মুসলিম দেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটা উচিত নয়। আমরা নামাজ পড়তে যাবো তাতে বাধা দেয়া হবে কেন? মসজিদ পাকা করে দেয়া ও নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য তিনি সরকারের কাছে দাবী জানান। মালিবাগ টিএন্ডটি কলোনীতে কর্তব্যরত আনসারদের গুলীবর্ষণ ও
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আনসারের মহাপরিচালক তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ১৯ জন আনসারকে ক্লোজ অবস্থায় ব্যারাকে থাকার নির্দেশ দেয়’ হয়েছে।